যুবকদের আশার আলো বাবুগঞ্জের  ড্রাগন বাগান

যুবকদের আশার আলো বাবুগঞ্জের  ড্রাগন বাগান

বরিশালের বাবুগঞ্জের আবু সুফিয়ান মো. পারভেজের বিশাল ড্রাগন বাগান এখন বেকার যুবকদের আশার আলো। এক যুগ প্রবাস জীবন কাটানোর পর দির্ঘ মেয়াদী আয়ের জন্য এই বাগান করেছেন তিনি। বাগান করার ১ বছরের মধ্যেই ড্রাগন ফল বিক্রি করে ৫লাখ টাকা আয় করেছেন তিনি। ড্রাগনের উৎপাদন বাড়াতে পারভেজের মত কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছে কৃষি বিভাগ।

মরুর দেশ দুবাইতে একযুগ প্রবাস জীবন কাটিয়ে ২০২০ সালে দেশে ফিরে আসেন বাবুগঞ্জ উপজেলার দেহেরগতি ইউনিয়নের ইদেলকাঠি গ্রামের আবু সুফিয়ান মো. পারভেজ। স্থায়ী আয়ের পথ তৈরী করতে ২০২১ সালের জুন মাসে নিজের এবং অন্যের ৭০ শতাংশ জমিতে গড়ে তোলেন বিশাল এক ড্রাগন বাগান। ৩২৫টি পিলারে ৩ হাজার ড্রাগন চারা রোপন করেন তিনি। রোপনের ১বছরের মধ্যেই ফলন আসতে শুরু করে তার বাগানে। প্রথম বছরে ২ হাজার ১'শ কেজি ড্রাগণ ৫ লাখ টাকায় বিক্রি করেন তিনি। 

প্রাগন চাষী আবু সুফিয়ান মো. পারভেজ জানান, চাকুরি ছেড়ে দীর্ঘমেয়াদী কিছু করার জন্য নিজেকে কৃষি কাজে নিয়োজিত করেন সে। ড্রাগনের চাইতে লাভজনক ফল দেশে আর নেই। সঠিক গুনগত মান সম্পন্ন ড্রাগন উৎপাদন করতে পারি দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব। পারভেজের ধারনা চাকুরী কিংবা ব্যবসায় লজ হবার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু কৃষি কাজে কোন লস হওয়ার সম্ভাবনা নেই তাই এই পথ বেচে নিয়েছেন তিনি।

ড্রাগনের সাথী ফসল হিসেবে একই বাগানে রসুন, পিয়াজ, স্ট্রবেরি, ধনে ও স্কোয়াশসহ বিভিন্ন শাক সবজী চাষ করেন তিনি। 

আশপাশে এ ধরনের বাগান না থাকায় আগ্রহ ভরে প্রতিদিন পারভেজের বাগান দেখতে আসছেন অনেকে। তাদের অনেকই ড্রাগন বাগান করার পরামর্শ নিচ্ছেন পারভেজের কাছ থেকে। লাভজনক ফল ড্রাগন চাষের কথা বলেছেন কেউ কেউ।

ড্রাগন বাগান দেখতে আসা মো. আরিফ জনান, ড্রাগনের পাশাপাশি আরও অন্যান্য সবজি চাষ করা যায় সেটা পারভেজ ভাইয়ের এই বাগান দেখে বুঝতেপারছি। সে আমাদের যুব সমাজের চোখ খুলে দিছে। গ্রামে থেকে নিজের জমিতে কৃষি কাজ করে স্বাবলম্বি হওয়া যায় সেটা তার কাছ থেকে শিখতে পারছি।

মো. শহিদুল ইসলাম জানান, চাকুরির পিছনে না ছুটে কৃষির উপরনির্ভশীল হয়ে ভাঙ্গ উন্নয়ন করা সম্ভব সেটা আমাদের গ্রামের পারভেজ ভাই শিখিয়েছে। তার কাছে গেলে অনেক পরামর্শ পাই এবং কালা কৌশল শেখার একটি মাধ্যম তৈরি হয়েছে। 

এদিকে ওই এলাকার বাসিন্দা ডা. গফুর উদ্দিন মঞ্জু জানান, পারভেজের দৃষ্টান্ত দিয়ে এলাকার যুবসমাজকে উদ্বদ্ধ করছি। কারন সে ড্রাগনের বাগান করে লাভবান হয়েছে। এই ড্রাগন গাছে দিনকে দিন বেশী ফলন হচ্ছে। এই কৃষি পদ্ধুতি যদি এলাকার মানুষ দেখে তাহলে এলাকার বেকার সমস্যা ও মাদকের কাছ থেকে যুবকরা দূরে থেকে কৃষিকাজে নিয়োজিত হতে পারবে।

বাবুগঞ্জ উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান জানান, বরিশালে ড্রাগন চাষ খুবই কম। পারভেজের বাগান দেখে আরও অনেকে ড্রাগন চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ড্রাগন চাষ বাড়লে উৎপাদন বাড়বে। তখন ড্রাগন সহজলভ্য হবে। ড্রাগন চাষে আগ্রহীদের সব ধরনের সহযোগিতা করার কথা বলেন তারা।

ভিয়েতনামী রেড, তাইওয়ান রেড, রেড ভেলভেট, পিঙ্ক রোজ এবং ভিয়েতনামী বিগ জায়েন্ট সহ হলুদ জাতের ড্রাগন চাষে ১৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে পারভেজের।